১) শ্রীল সনাতন
গোস্বামী বিরচিত শ্রীকৃষ্ণলীলা স্তব থেকে -
সর্ব-শাস্ত্রাব্দী-পীযুষ / সর্ব-বেদৈক-সৎ-ফল
সর্ব-সিদ্ধান্ত-রত্নাঢ্য / সর্ব লোকৈক-দৃক-পদ
সর্ব-ভাগবত-প্রান / শ্রীমদ্ভাগবত-প্রভু
কলি-ধান্তোদিত-আদিত্য / শ্রীকৃষ্ণ-পরিবর্তিত ।। ১।।
অনুবাদঃ সর্ব-শাস্ত্রাব্দী-পীযুষ = সমস্ত শাস্ত্রের রস
(অমৃত) হচ্ছে শ্রীমদ্ভাগবত। (সমুদ্রকে মন্থন করে যা পাওয়া যায় অর্থাৎ অমৃত) তেমনি
সমস্ত শাস্ত্রকে মন্থন করে যা পাওয়া যায় তা হচ্ছে শ্রীমদ্ভাগবত ।)
সর্ব-বেদৈক-সৎ-ফল
= সমস্ত শাস্ত্রের ফল (নিগম গলিত ফল)
সর্ব-সিদ্ধান্ত-রত্নাঢ্য
= সমস্ত সিদ্ধান্তের ভান্ডার । যে কোন সিদ্ধান্ত (রাজনীতি, সমাজনীতি, রসায়ন,
জ্যোতিষ ইত্যাদি)
সর্ব লোকৈক-দৃক-পদ
= সমস্ত লোকের দিশা প্রদানকারী ।
সর্ব-ভাগবত-প্রান
= সমস্ত মহানভক্তের প্রান হচ্ছে শ্রীমদ্ভাগবত ।
শ্রীমদ্ভাগবত-প্রভু = হে প্রভু
শ্রীমদ্ভাগবত ।
কলি-ধান্তোদিত-আদিত্য
= কলিযুগের অন্ধকারকে দুর করার জন্য এই ভাগবত উদিত হয়েছে ।
শ্রীকৃষ্ণ-পরিবর্তিত
= শ্রীকৃষ্ণই হচ্ছেন ভগবান স্বয়ং যিনি যিনি আমাদের কাছে শ্রীমদ্ভাগবত রূপে
আবির্ভুত ।
২) শ্রীমদ্ভাগবত
সর্ব শাস্ত্রের শিরোমণি
ধর্মঃ প্রোজ্ঝিত-কৈতবঃ – অত্র পরমো নির্মৎসরাণাং সতাং
বেদ্যং
বাস্তবম্-অত্র বস্তু শিবদং তাপ-ত্রয়-উন্মূলনম্ ।
শ্রীমদ্ভাগবতে মহামুনিকৃতে
কিং বা পরৈরীশ্বরঃ
সদ্যো
হৃদি-অবরুধ্যতে-অত্র কৃতিভিঃ শুশ্রূষুভিঃ – তৎ -ক্ষণাৎ ।।২।।
(ভাঃ ১/১/২)
অনুবাদঃ জড় বাসনাযুক্ত সব রকমের ধর্ম সম্পূর্ণভাবে বর্জন করে
এই ভাগবত পুরাণ পরম সত্যকে প্রকাশ করেছে, যা কেবল সর্বতোভাবে নির্মৎসর ভক্তরাই
হৃদয়ঙ্গম করতে পারেন । পরম সত্য হচ্ছেন পরম মঙ্গলময় বাস্তব বস্তু । সেই সত্যকে
জানতে পারলে ত্রিতাপ দুঃখ সমূলে উৎপাটিত হয় । মহামুনি বেদব্যাস (উপলব্ধির পরিপক্ক
অবস্থায়) এই শ্রীমদ্ভাগবত রচনা করেছেন এবং ভগবৎ-তত্ত্ব হৃদয়ঙ্গম করতে এই গ্রন্থটিই
যথেষ্ট । সুতরাং অন্য কোনও শাস্ত্রগ্রন্থের আর কি প্রয়োজন ? কেউ যখন শ্রদ্ধাবনত
চিত্তে এবং একাগ্রতা সহকারে এই ভাগবতের বাণী শ্রবণ করেন, তখন তাঁর হৃদয়ে ভগবৎ-তত্ত্বজ্ঞান
প্রকাশিত হয়।
কৃষ্ণভক্তি-রস-স্বরূপ শ্রীভাগবত ।
তাতে বেদ-শাস্ত্র হৈতে পরম মহত্ত্ব ।।৩।।
(চৈঃচঃমধ্য ২৫/১৪৩)
৩) শ্রীমদ্ভাগবত
- বেদরূপী বৃক্ষের সুপক্কফল ও মুক্তপুরুষদের একমাত্র উপাস্য
নিগম-কল্প-তরোঃ-গলিতং ফলং
শুক-মুখাৎ-অমৃত-দ্রব-সংযুতম্ ।
পিবত ভাগবতং
রসমালয়ং
মুহুরহো রসিকা ভুবি ভাবুকাঃ ।।৪।।
(ভাঃ ১/১/৩)
অনুবাদঃ হে বিচক্ষণ এবং চিন্তাশীল মানুষ, কল্পবৃক্ষরূপী
বৈদিক শাস্ত্রের অত্যন্ত সুপক্ক ফল শ্রীমদ্ভাগবত আস্বাদন করুন । তা শ্রীল শুকদেব
গোস্বমীর শ্রীমুখ থেকে নিঃসৃত হয়েছিল । তাই এই ফলটি আরও অধিক উপাদেয় হয়েছে, যদিও
এই অমৃতময় রস মুক্ত পুরুষেরা পর্যন্ত আস্বাদন করে থাকেন ।
৪)
শ্রীমদ্ভাগবত – শ্রীকৃষ্ণের
গ্রন্থরূপি শ্রীবিগ্রহ এবং দিব্যজ্ঞানালোক
প্রদানকারী পুরাণরূপ সূর্য
কৃষ্ণে স্ব-ধাম-উপগতে /
ধর্ম-জ্ঞান-আদিভিঃ সহ
কলৌ
নষ্ট-দৃশাম্-এষ / পুরাণ-অর্কঃ-অধুনা-উদিতঃ ।।৫।।
(ভাঃ
১/৩/৪৩)
অনুবাদঃ শ্রীকৃষ্ণ যখন তাঁর লীলা সংবরণ করে ধর্ম ও
তত্ত্বজ্ঞান সহ নিজ ধামে গমন করলেন, তখন সূর্যের মতো উজ্জ্জল এই পুরাণের উদয় হয়েছে
। কলিযুগের অন্ধকারে আচ্ছন্ন ভগবৎ-দর্শনে অক্ষম মানুষেরা এই পুরাণ থেকে আলোক
প্রাপ্ত হবে ।
পাদৌ যদীয়ৌ প্রথম-দ্বিতয়ৌ /
তৃতীয়তুর্য্যো কথিতৌ যদুরূ
নাভিস্তথা পঞ্চম
এব যষ্ঠো / ভূজান্তরং দোর্যুগলং তথান্যৌ
কন্ঠস্তু
রাজন-নবমো যদীয়ো / মুখারবিন্দং দশমঃ প্রফুল্লম্
একদশো যস্য
ললাটপট্টং / শিরোহপি তু দ্বাদশ এব ভাতি ।।
তমাদিদেবং
করুণানিধানং / তমালবর্ণং সুহিতাবতারম্ ।
অপারসংসার-সমুদ্র-সেতুং
/ ভজামহে ভাগবত-স্বরূপম্ ।।৬।। ( পদ্মপুরাণ )
অনুবাদঃ আমি আদিদেব, করুণানিধান, তমালবর্ণ শ্রীকৃষ্ণের
মঙ্গলময় শাব্দিক অবতার, অপার-সংসার-সাগর পার হইবার সেতু-স্বরূপ শ্রীমদ্ভাগবতকে
ভজনা করি । এই গ্রন্থাবতারের দ্বাদশটি স্কন্ধ শ্রীভগবানের দ্বাদশটি অঙ্গ-স্বরূপ ।
প্রথম ও দ্বিতীয় স্কন্ধ ইহাঁর পদযুগল, তৃতীয় ও চতুর্থ স্কন্ধ ইহাঁর উরুদ্বয়, পঞ্চম
ইহাঁর নাভিদেশ, ষষ্ঠ স্কন্ধ ইহাঁর ভুজান্তর অর্থাৎ বক্ষঃস্থল । সপ্তম ও অষ্টম এই
দুইটি ইহাঁর দুইটি বাহু, দশম স্কন্ধ ইহাঁর প্রফুল্ল মুখপদ্ম স্বরূপ, একাদশ ইহাঁর
ললাটদেশ এবং দ্বাদশ স্কন্ধ ইহাঁর মস্তক ।
ইদং ভাগবতং নাম / পুরাণ
ব্রহ্মসম্মিতম্ ।
উত্তমশ্লোকচরিতং / চকার
ভগবান্-ঋষিঃ ।
নিঃশ্রেয়সায়
লোকস্য / ধন্যং স্বস্ত্যয়নং মহৎ ।। ৭ ।।
(ভাঃ ১/৩/৪০)
অনুবাদঃ এই শ্রীমদ্ভাগবত হচ্ছে পরমেশ্বর ভগবানের বাঙ্ময়
বিগ্রহ এবং তা সংকলন করেছেন ভগবানের অবতার শ্রীল ব্যাসদেব । তাঁর উদ্দেশ্য হচ্ছে
সমস্ত মানুষের পরম মঙ্গল সাধন করা এবং এটি সর্বতোভাবে সার্থক, পূর্ণ আনন্দময় এবং
সর্বতোভাবে পরিপূর্ণ ।
কৃষ্ণতুল্য ভাগবত বিভু
সর্বাশ্রয় ।
প্রতি-শ্লোকে
প্রতি-অক্ষরে নানা অর্থ কয় ।।৮।।
(চৈঃচঃ মধ্য-২৪/৩১২)
ভাগবত,
তুলসী, গঙ্গায়, ভক্তজনে ।
চতুর্দ্ধা
বিগ্রহ কৃষ্ণ এই চারি সনে ।।৯।।
(চৈঃভাঃ মধ্য- ২১/৮১)
Excellent!!!
ReplyDeleteখুব সুন্দর পোস্ট। ধন্যবাদ
ReplyDeleteHare krishna..
ReplyDeleteHaribol
ReplyDeleteপড়ুন => শ্রীমদ্ভাগবত বাংলা PDF Download
ReplyDeleteঅনেক সুন্দর
ReplyDelete